লম্বা লম্বা, দুর্দান্ত অ্যাকশন, উপর থেকে ফাস্ট পেস বোলারের খেলা যে কোনো ব্যাটসম্যানের পক্ষেই কঠিন ছিল। যার সুইং করা বল উইকেটে চুমু খেতে খেতে ব্যাটসম্যানদের প্যাভিলিয়নের পথ দেখাতেন। আমরা ইরফান পাঠানের কথা বলছি, যাকে বলা হয় ‘`মতো বোলাররা পাকিস্তানের রাস্তায় খেলে। তবে তার এই বক্তব্যের পর ২০০৪ সালের মার্চে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে ৩ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ইরফান। তিনি তার অভিনয় দিয়ে জাভেদকে যোগ্য জবাব দিয়েছেন।

একজন বোলার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করা ইরফান পরবর্তীতে একজন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হিসাবে ক্রিকেট বিশ্বে নিজের ছাপ রেখেছিলেন। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতন ছিল। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ইরফান পাঠানকে ধারাভাষ্য করতে দেখা যায়।

একই সময়ে, ইরফান একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো মনের মানুষ। তাকে প্রায়ই তার বড় ভাই ইউসুফ পাঠানের সাথে মানুষকে সাহায্য করতে দেখা যায়। তারপর সেটা করোনা মহামারীই হোক বা গুজরাটের বন্যার সময় অভাবী মানুষকে সাহায্য করা।

করোনা সংকটে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির এক মুচি বন্ধুকে সাহায্য করে মানবতার উদাহরণ পেশ করেছেন তিনি। তারপর যার শৈশব কেটেছে দারিদ্র্য ও দারিদ্র্যের মধ্যে। সে অন্যের সমস্যা খুব ভালো বুঝতে পারে

ভারতের হয়ে দ্রুততম 100 উইকেট নেওয়া ইরফান পাঠান, 27 অক্টোবর 1984 সালে গুজরাটের বরোদায় একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাহমুদ পাঠান মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। ইরফানের শৈশব কেটেছে মসজিদের পেছনে একটি ছোট ঘরে।

দরিদ্র বাবা-মা তাদের ছেলেকে শিক্ষিত করে ইসলামিক স্কলার বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ইরফান তার জগত খুঁজে পেয়েছেন অন্য কোথাও। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। আগে পরিবারের কাছ থেকে গোপনে ক্রিকেট খেলতে যেতেন। পরে পরিবারের সদস্যরা ক্রিকেটের জন্য তাদের যোগ্য সন্তানের নিবেদন ও পরিশ্রম দেখে অস্বীকার করতে পারেননি।

দরিদ্র পিতা আবার তার ছেলের জন্য যা করা সম্ভব করলেন। ইরফানও তার পুরো মনোযোগ ক্রিকেটে দিতে শুরু করেন। প্রখর রোদে একটানা ৬-৬ ঘণ্টা ঘামছে সে। এমনকি দারিদ্র্যও তার আবেগের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ইরফান বলেছেন যে তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না যাতে তিনি এবং তার ভাই ইউসুফ নতুন ক্রিকেট কিট কিনতে পারেন।

এর জন্য তিনি বছরের পর বছর ব্যবহার করেছেন সেকেন্ড হ্যান্ড ক্রিকেট কিট। কিন্তু তার হাতে নতুন বল ব্যাটসম্যানদের জন্য মারাত্মক রূপ নিত। তখনও হয়তো তারা জানত না যে ভবিষ্যতে এই সুইং করা নতুন বল ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হবে।

বর্তমানে ইরফান পাঠানকে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক দত্ত গায়কওয়াড় প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তপস্যা করে বেরিয়ে আসা ইরফান অল্প বয়সেই বরোদা দল থেকে প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খেলা শুরু করেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট করতেন। 13 বছর বয়সে জুনিয়র ক্রিকেটে অভিষেক হয় ইরফানের।

 

অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার সময় তিনি দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। তখন ব্যাট ও বল দুই হাতেই দুর্দান্ত পারফর্ম করছিলেন ইরফান। ঘরোয়া ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ডিসেম্বর 2003 সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে ইরফান ভারতীয় ক্রিকেট দলে নির্বাচিত হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here